ঢাকা, ৬ অক্টোবর : জঙ্গি হামলার হুমকির বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারকে আগেই অবহিত করা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেন বার্নিকাট। সোমবার ঢাকায় ‘ডিপ্লোম্যাটিক করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিকাব)’ আয়োজিত ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে এমন দাবি করেন তিনি।
এ সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আইএসসহ সহিংস উগ্রবাদ দমনে যৌথ উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে আইএসের উত্থান মোকাবেলার জন্য যা যা দরকার, তা সবই আমাদের আছে।’
তিনি বলেন, ‘বেশ কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় আমরা সন্ত্রাসবাদ এবং সহিংস উগ্রবাদ দমনে নিজেদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেছি। আর অংশীদারত্বের ক্ষেত্রে আমাদের অঙ্গীকার জোরালো করেছি। প্রধানমন্ত্রীও (শেখ হাসিনা) সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে রয়েছেন। আমরা আমাদের নিরাপত্তার স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বার্নিকাট বলেন, ‘বাংলাদেশ যদি ইতালি ও জাপানের নাগরিক হত্যার তদন্তে সহযোগিতা চায়, আমারা সহাযোগিতার জন্য প্রস্তুত আছি।’
ইতালি ও জাপানি নাগরিক হত্যার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘উভয় হামলা একই ধরনের এবং বাংলাদেশে এটা অস্বাভাবিক ঘটনা। বিদেশীদের জন্যে বাংলাদেশীদের আপ্যায়নের সুনাম আছে। এটার কোনও পরিবর্তন হয়নি।’
বাংলাদেশে হুমকির বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের ভিত্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা কোনো তথ্যই উড়িয়ে দেই না। বরং জনগণ ও অংশীদারদের কাছ থেকে এবং নিজস্ব সূত্র- উভয় স্থান থেকে প্রাপ্ত তথ্যকে আমরা যাচাই করে দেখি। এখানেও সেটাই হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমার প্রথম দায়িত্ব হলো আমার দেশের নাগরিকদের সুরক্ষা দেয়া। অন্য দেশও একই কারণে ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে। প্রথম হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পূর্বে আমাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য সূত্রের হুমকির তথ্য ছিল। বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারকে অবহিত করা হয়েছিল।’
অবশ্য নিজে এখন বাংলাদেশে নিরাপদ বোধ করছেন উল্লেখ করে বার্নিকাট বলেন, ‘বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের ভ্রমণবিষয়ক সতর্কতা হালনাগাদ করেছি। ওই তথ্য বাংলাদেশ সরকারকেও জানানো হয়েছিল। সতর্কতা জারির প্রেক্ষিতে সরকারের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। তাদের পদক্ষেপ প্রশংসনীয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ওই বার্তায় মার্কিন নাগরিকদের বাংলাদেশ থেকে চলে যেতে বলিনি, আবার আসতেও নিষেধ করিনি। শুধু বাংলাদেশে অবস্থানের সময় সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছি।’
বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে যারা মানবাধিকার লংঘন করে তাদের খুঁজে বের করতে হবে। আমরা শুধু আমাদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে যাবো। পাশাপাশি, এসব ইস্যু নিষ্পত্তি করতে আমরা আমাদের সহায়তা দিতেও প্রস্তুত আছি।’
ডিকাব সভাপতি মাসুদ করিমের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক বশির আহমেদ। গত ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এই প্রথম বার্নিকাট ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।