স্পোর্টস ডেস্ক, ৬ অক্টোবর : ক্রিকেটে দর্শকদের উচ্ছৃঙ্খলতার সবচেয়ে কলঙ্কিত নজিরটি ভারতেরই। ইডেনে ১৯৯৬ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালটাই পণ্ড হয়ে গিয়েছিল দর্শক হাঙ্গামায়। সোমবার আবারও ভারতীয় দর্শকদের উচ্ছৃঙ্খল আচরণের কারণে বিঘ্ন হলো ক্রিকেট ম্যাচ। কটকে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বন্ধ ছিল প্রায় আধঘণ্টা। কিন্তু আবারও দুই ওভার খেলা হওয়ার পরই দুদলই মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যায়।
মাত্র ৯২ রান করে অলআউট হয়ে যায় ভারত। এ নিয়ে হয়তো বরাবতী স্টেডিয়ামে গ্যালারির একটি অংশ ক্ষুব্ধ হয়ে থাকতে পারে। দল ভালো না করলে হতাশা থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু সেটার প্রকাশ সংযমের মাত্রা ছাড়ালেই সর্বনাশ। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের ১১তম ওভার শেষে থামিয়ে দিতে হয় খেলা। বৃষ্টির মতো গ্যালারি থেকে উড়ে আসতে থাকে পানির বোতল। তখন ৫৪ বলে ২৯ রান দরকার ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। বাধ্য হয়ে দুই আম্পায়ার খেলা থামিয়ে দেন। ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রড মাঠে নেমে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আসেন। গ্যালারির ওই অংশ থেকে দর্শকদের বের করে দেন নিরাপত্তাকর্মীরা। অনাকাঙ্ক্ষিত বিরতির পর আবার শুরু হয় খেলা। দুই ওভারে প্রোটিয়ারা তোলে ৬ রান। কিন্তু আবারও দর্শকদের একটি অংশে বোতল ছোড়াছুড়ি শুরু হলে খেলা থেমে যায়। এবার পুরো গ্যালারিই ফাঁকা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ কারণে খেলা বন্ধ থাকে ২৫ মিনিটের মতো। খেলা পুনরায় শুরু হলে ফারহান বেহেরডিয়ানকে হারিয়ে ৬ উইকেট হাতে রেখে সহজেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় প্রোটিয়ারা। জেপি ডুমিনি অপরাজিত ছিলেন ৩০ রানে।
এর আগে প্রথম ব্যাট করে মাত্র ৯২ রানে অলআউট হয় ভারত। শুরু থেকেই দাঁড়াতে দেননি দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা। বোলারদের দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন ফিল্ডাররাও। প্রথম তিন ব্যাটসম্যানের দুজনই রানআউটের শিকার। এর মধ্যে রোহিত শর্মা করেছেন ২২। ২২ এসেছে সুরেশ রায়নার ব্যাটেও। ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ ইনিংসটা মাত্র ১১ রানের, করেছেন শিখর ধাওয়ান ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন। বাকি সাত ব্যাটসম্যান মিলে করেছেন মোটে ২০ রান! কোহলি ১, ধোনি ৫; আম্বাতি রাইডু, হরভজন সিং আর ভুবনেশ্বর কুমার আউট হয়েছেন শূন্য রানে। অতিরিক্ত থেকে এসেছে ১১। ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন অ্যালবি মরকেল।
খেলা শুরু হওয়ার অপেক্ষায় ভারতীয় খেলোয়াড়েরা।
এ জয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটি জিতে নিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে জয়-পরাজয় ছাপিয়ে ক্রিকেটে ভদ্রলোকের খেলার যে চেতনাবোধ বড় করে দেখা হয়, সেটি আরও একবার কলঙ্কিত হলো।
গত জুলাইয়ে কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামেও দর্শকদের হাঙ্গামায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তানের একটি ওয়ানডে ম্যাচ।