ব্ল্যাটারের আপিল, প্লাতিনি লড়বেন

0

স্পোর্টস ডেস্ক, ১০ অক্টোবর : সেপ ব্ল্যাটার, মিশেল প্লাতিনিকোণঠাসা হয়ে গেছেন একেবারেই। পায়ের নিচেও মাটি নেই বললেই চলে। তারপরও হাল ছাড়ছেন না সেপ ব্ল্যাটার। ফিফার নৈতিকতা কমিটির দেওয়া নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সংস্থার আপিল কমিটির কাছে আপিল করেছেন ক্ষমতাচ্যুত ফিফা সভাপতি। ব্ল্যাটারের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করে এ বিষয়ে ফিফার নৈতিকতা কমিটির কাগজপত্র দেখতে চেয়েছেন তাঁর আইনজীবীরা।

বসে নেই নিষিদ্ধ হওয়া মিশেল প্লাতিনিও। যথারীতি তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিক সময়ে সঠিক প্রক্রিয়ায় আপিল করবেন বলে পরশুই জানিয়েছিলেন উয়েফা সভাপতি। কাল তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে উয়েফাও বলেছে, এ প্রক্রিয়ায় প্লাতিনিকে সব রকম সহযোগিতা করবে তারা। যদিও সাময়িকভাবে তাঁকে সভাপতি হিসেবে সব ধরনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে উয়েফা।

দুর্নীতির অভিযোগে পরশু ফিফা সভাপতি সেপ ব্ল্যাটার, মহাসচিব জেরোম ভালকে ও সহসভাপতি মিশেল প্লাতিনিকে ৯০ দিনের জন্য ফুটবলের সব ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে নিষিদ্ধ করে ফিফার নৈতিকতা কমিটি। এ ছাড়া সাবেক সহসভাপতি দক্ষিণ কোরিয়ার চুং মং-জুনকে ৬ বছরের জন্য নিষিদ্ধ এবং ১ লাখ সুইস ফ্রাঁ জরিমানা করা হয়েছে। শাস্তির বিপক্ষে চুং মং-জুনও আপিল করবেন, তবে তিনি শরণাপন্ন হবেন আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতের।

ব্ল্যাটারের বন্ধু এবং উপদেষ্টা ক্লাউস স্টোকার আপিল করার বিষয়টি কাল নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘তিনি তাঁর অবস্থানের পক্ষে লড়বেন এবং নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার ব্যাপারেও তিনি নিশ্চিত।’ নিউইয়র্ক টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্ল্যাটারের আইনজীবীরা আপিল কমিটির কাছে পূর্ণাঙ্গ শুনানির দাবি করেছেন। তদন্তে যেসব কাগজপত্রের ভিত্তিতে ব্ল্যাটারকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, সেগুলোও দেখতে চেয়েছেন আইনজীবীরা।

৯০ দিনের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদে সব ধরনের ফুটবল-সংশ্লিষ্ট কোনো কার্যক্রমেই যুক্ত থাকতে পারবেন না থেকে ব্ল্যাটার, প্লাতিনি ও ভালকে। ফিফার নৈতিকতা কমিটির এ ঘোষণাটির পর পরই তাই ফিফার অস্থায়ী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন আফ্রিকান ফুটবল ফেডারেশনের প্রধান ক্যামেরুনের ইসা হায়াতু। তবে প্লাতিনিকে নিয়ে শুরুতে একটু অন্য কথা বলেছিল উয়েফা। পরশু ফিফার নৈতিকতা কমিটির ঘোষণা আসার পর উয়েফার প্রাথমিক এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘উয়েফা নির্বাহী কমিটি এ মুহূর্তে প্লাতিনিকে তাঁর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ায় কোনো প্রয়োজন মনে করছে না। কারণ উয়েফা নির্বাহী কমিটি অবগত যে, উয়েফা সভাপতি নিজের স্বচ্ছতা প্রমাণের
জন্য শিগগির নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপিল করবেন।’

পরে আরেকটি বিবৃতিতে উয়েফা বলেছে, ‘ফিফার নৈতিকতা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্লাতিনি সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ, সে কারণেই তিনি সাময়িকভাবে উয়েফা সভাপতি হিসেবে তাঁর দায়িত্বে থাকবেন না। তিনি আজ উয়েফা নির্বাহী কমিটির বৈঠকেও ছিলেন না এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিক সফরও বাতিল করেছেন।’

প্রায় কাছাকাছি সময়ে আলাদা এক বিবৃতিতে প্লাতিনি বলেছেন, ‘যথোপযুক্ত বিচারিক প্রতিষ্ঠানের সামনে আমি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে যেকোনো সময়ের চেয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমি উয়েফার সদস্য ফেডারেশন এবং অন্যান্য ফেডারেশনের কাছও থেকে অনেক সমর্থনবার্তা পেয়েছি। তারাও ফুটবলের স্বার্থে আমাকে কাজ করে যেতে সাহস দিচ্ছেন।’ ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার বলেছেন, ফিফার নৈতিকতা কমিটি তাঁকে সাময়িক নিষিদ্ধ করলেও বিশ্ব ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থার পরবর্তী প্রধান হওয়ার আশাটা তিনি ছাড়ছেন না। কারণ তাঁকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে ‘অনুমাননির্ভর’ বিস্ময়কর রকমের ‘অস্পষ্ট’ ধারণা থেকে।

সংকটময় এ মুহূর্তে একটা জরুরি বৈঠক ডাকার জন্য পরশুই অস্থায়ী সভাপতি বরাবর চিঠি লিখেছেন ফিফার আরেক সহসভাপতি ও ইংলিশ এফএর ভাইস চেয়ারম্যান ডেভিড গিল। কাল তাঁর মতোই একই দাবি করেছেন এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) সভাপতি শেখ সালমান বিন ইব্রাহিম আল খলিফা। গতকাল অবশ্য সংস্থার নির্বাহী কমিটির জরুরি বৈঠকের ঘোষণা দিয়েছে ফিফা। ২০ অক্টোবর জুরিখে হবে বৈঠক। এএফপি, রয়টার্স।

Share.
মন্তব্য লিখুনঃ

 

',