স্পোর্টস ডেস্ক, ১৭ সেপ্টেম্বর : আলেসান্দ্রো ফ্লোরেনজি ভেবে-চিন্তেই মেরেছিলেন শটটা। বার্সেলোনা গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টার-স্টেগান গোলপোস্ট ছেড়ে একটু সামনে এগিয়ে এসেছিলেন। ব্যাপারটা লক্ষ করেই ফ্লোরেনজির ‘সুযোগ নেওয়া’ সেই শট। রোম অলিম্পিক স্টেডিয়ামের দর্শকদের আনন্দে ভাসিয়ে সেই ‘সুযোগ নেওয়া’ শটটিই পোস্টে লেগে জড়িয়ে গেল জালে।
‘অবাক’ এই গোলেই জয়-বঞ্চিত বার্সেলোনা। ২১ মিনিটে লুইস সুয়ারেজের গোলে এগিয়ে থাকা দলটি ফ্লোরেনজির ওই সমতাসূচক গোলের পর আর খুঁজে পায়নি ইতালীয় জায়ান্ট রোমার গোলপোস্টের জাল।
চ্যাম্পিয়নস লিগে নিজের শততম ম্যাচটি জিতে শেষ করতে পারলেই খুশি হতেন লিওনেল মেসি। কিন্তু তাঁর সেই সুযোগ হয়নি। সম্ভব হয়নি গোল করে চ্যাম্পিয়নস লিগে এই মুহূর্তে সর্বকালের সেরা গোলদাতা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সঙ্গে ব্যবধান কমিয়ে নিয়ে আসাও।
পুরো ম্যাচটা সত্যিকার অর্থে খেলেছে বার্সেলোনাই। রোমার ফুটবল-কৌশল ছিল চিরাচরিত রক্ষণাত্মক। কিন্তু সেই রক্ষণটাই দুর্দান্তভাবে করে গিয়ে বার্সেলোনার কাছ থেকে একটা পয়েন্ট কেড়ে নিতে পেরেছে তারা। রোমার রক্ষণাত্মক কৌশল নিয়ে বিরক্তি থাকলেও মুখ ফুটে কিছু বলেননি বার্সেলোনা কোচ লুইস এনরিকে, ‘আমি আমার দলের খেলায় সন্তুষ্ট। বার্সেলোনা পুরো খেলায় প্রচুর সুযোগ সৃষ্টি করেছে। কিন্তু প্রতিপক্ষ যখন রক্ষণে এককাট্টা, তখন ব্যাপারটা এত সোজা নয়।’
তবে জয়টা মনে-প্রাণেই চেয়েছিলেন এনরিকে, ‘জয়টা অবশ্যই অনেক বেশি তৃপ্তিদায়ক হতো। তবে আমি বলছি না যে ড্রটা খারাপ ফল। আমরা চেষ্টা করেছি। গোলের অনেক সুযোগ তৈরি করেছি। সম্ভব-অসম্ভব সব কিছু দিয়েই লড়াই চালিয়েছি। সফল হইনি। এটাই তো ফুটবল।’
শততম ম্যাচে মেসি ছিলেন তাঁর মতোই। পায়ে বল নিয়ে অনেকবারই রোমার রক্ষণে আতঙ্ক ছড়িয়েছেন। কিন্তু তাঁর দুর্ভাগ্য গোলের দেখা তিনি পাননি। ম্যাচের ২১ মিনিটে একটু বিভ্রান্তির মধ্যেই ১-০ গোলে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। বিভ্রান্তিটা মেসিকে নিয়েই। নিজেদের বক্সে মেসির পায়ে বেজে পড়ে যান লুকাস দিগনে। রোমার দাবি ছিল দিগনেকে ফাউল করেছেন মেসি। রেফারির দিকে অতিরিক্ত মনোযোগ দিয়েই বোধ হয় সর্বনাশটা হয় রোমার। প্রায় বিনা বাধায় ইভান কিরিচের ক্রস থেকে গোলপোস্টের খুব কাছে দাঁড়িয়ে হেড করে গোল করেন লুই সুয়ারেজজ।
এর কিছু বাদেই রোমা গোলরক্ষক সেসেজনি বক্সের মধ্যে সুয়ারেজকে ফেলে দিলেও রেফারি তা এড়িয়ে যান। ৩১ মিনিটে স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকদের ফ্লোরেনজি উপহার দেন সেই ‘অবাক গোল’। প্রায় মধ্যমাঠ থেকে তাঁর নেওয়া শটটি গোলপোস্টে লেগে চলে যায় জালে। গোলরক্ষক টার-স্টেগানের বোকার মতো চেয়ে দেখা ছাড়া এই সময় করার ছিল না কিছুই।
এর পরেও গোটা দুই সুযোগ থেকে গোল পেতে পারতো বার্সেলোনা। প্রথমবার মেসির শট ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক সেজেনজি। পরের বার এই সেজেনজিই সুয়ারেজের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে রোমাকে বাঁচান নিশ্চিত হারের হাত থেকে। সূত্র: এএফপি।