গরুর হাটে আ’লীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ : নিহত ২

0

চট্টগ্রাম, ২১ সেপ্টেম্বর : চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে গরুর হাটের দখল নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। সোমবার বিকাল ৫টার দিকে সন্দ্বীপ পৌরসভার বাতেন মার্কেট এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়।

নিহতরা হলেন- মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) ও হুমায়ুন কবির (৫০)।

পুলিশ জানায়, বাতেন মার্কেট এলাকায় পশুরহাট বসা নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। একটির পক্ষে যুবলীগ নেতা জাফর ও অপরপক্ষে ফজলে এলাহী ওরফে মিশু নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। মিশু পক্ষের লোকজন বিকালে পশুর হাটে হামলা চালায়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন যুবলীগকর্মী জাহাঙ্গীর আলম ও পথচারী হুমায়ুন কবির। ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুজনের লাশ উদ্ধার করে।

গোলাগুলির সময় গরুর হাটে আসা লোকজন ও গরু ব্যবসায়ীরা দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করে। অনেকে গরু-মহিষ ফেলে বাজার থেকে প্রাণ ভয়ে পালিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নেন। প্রায় আধা ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলাকালে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীদের অনেক গরু পালিয়ে যায়। সংঘর্ষ থামার পর নিজেদের গরু না পেয়ে অনেককে কান্নাকাটি করতে দেখা গেছে।

ইজারাদার মো. মোকতার হোসেন জানান, তিনি দুই লাখ টাকা দিয়ে পৌরসভার কাছ থেকে হাটটি ইজারা নেন। সপ্তাহের শুক্র ও সোমবার হাটটি বসে। তিনি বলেন, এই হাট ইজারা নেওয়ার পর থেকে স্থানীয় যুবলীগ সমর্থিত ফজলে এলাহী ওরফে মিশু তার কাছ থেকে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছেন। চাঁদা না দিলে হাট বসাতে পারবেন না বলে হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি।

মোকতার হোসেন বলেন, সোমবার বিকালে ফজলে এলাহীর নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একটি দল মোটরসাইকেল নিয়ে হাটে এসে তাকে খুঁজতে থাকে। ভয়ে তিনি হাট থেকে পালিয়ে যান। তাকে না পেয়ে একপর্যায়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়তে থাকে তারা। সন্ত্রাসীরা পশু বিক্রির হাসিল বাবদ পাওয়া প্রায় ৫০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন মোকতার।

এ ব্যাপারে জানতে ফজলে এলাহীর মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেওয়া হয়। তবে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

সীতাকুণ্ড সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সালাউদ্দিন সিকদার রাতে মোবাইলফোনে বলেন, এর পেছনের যুবলীগ নামধারী কিছু সন্ত্রাসী আছে বলে তারা জেনেছেন। লাশগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

এদিকে ঘটনার পর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার পর পুরো বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় পশুর হাট। ঈদের চারদিন আগে পশুর হাটে এ হামলার ঘটনায় পুরো এলাকাজুড়ে উদ্বেগ শুরু হয়েছে বলে জানান স্থানীয় গরুর ক্রেতা কামাল উদ্দিন বাবু।

Share.
মন্তব্য লিখুনঃ

 

',