টাঙ্গাইল, ১৯ সেপ্টেম্বর : টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় পুলিশের গুলিতে ৩ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় সেখানে দায়িত্ব পালনরত পুলিশের সব সদস্যকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শনিবার বিকালে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এস এম মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। কেন কী কারণে এই ঘটনা ঘটল, কেনই বা গুলি করার প্রয়োজন হলো, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার জিল্লার রহমান বলেন, গুলি করার যৌক্তিকতা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে এই ঘটনা তদন্তে ও সেখানে দায়িত্ব পালনকারীদের দায়দায়িত্ব নিরূপণের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স। পুলিশের ভারপ্রাপ্ত আইজি মো. মোখলেছুর রহমানের নির্দেশে অতিরিক্ত ডিআইজি (ডিসিপ্লিন) মো. আলমগীর আলমকে সভাপতি, ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আক্তারুজ্জামান এবং টাঙ্গাইল জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসলাম খানকে সদস্য করে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ আলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি ধৈর্য ধারণ করে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য পুলিশ ও জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, কালিহাতীতে মা ও ছেলেকে বিবস্ত্র করে ছেলের সামনেই মাকে ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষকের বিচার দাবিতে শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে কালিহাতী উপজেলা সদরে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়ক অবরোধ করে এলাকাবাসী বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রথমে লাঠিপেটা ও পরে রাবার বুলেট ছোড়ে। ওই সময় বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে বিজিবি ও র্যাব পুলিশের সঙ্গে যোগ দেয়। এ সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়। গুলিবিদ্ধ হন আরো সাতজন।
এদিকে, শুক্রবারের ওই ঘটনার পর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। উপজেলা সদর দিয়ে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল করলেও শহরের অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শহরে লোকজনের উপস্থিতি কম।
তবে পুলিশ ও বিজিবি শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।