ডেস্ক : শিশুরা আসলেই অনেক নিষ্পাপ হয়। তারা দুনিয়ার ভাল-মন্দ, লোভ-লালসা, ত্যাগ-তিতিক্ষা কিছু বোঝে না। তারা শুধু ভালোবাসা পেতে ও দিতে ভালোবাসেন। তবে, এবার দেখা মিলল নিষ্পাপ শিশুর ছোট ছোট কাঁধে বিরাট এক কাজের বোঝা।
কাজের বোঝা আসলে সেই শিশুর কাছে নয়। পৃথিবীর কিছু হতভাগ্য মানুষ রয়েছে যারা এটাকে বোঝা বলে মনে করেন। তাই সেই শব্দের প্রয়োগ।
চায়নার পশ্চিম ও দক্ষিণের গুইজো প্রদেশে সাত বছরের এক শিশু তার প্যারালাইসিসে আক্রান্ত পিতার গত এক বছর ধরে অত্যন্ত যত্নের সাথে দেখাশুনা করছেন।
২০১৩ সালে অউ ইয়াগালিনের বাবা তাদের বাড়ির তিন তলা থেকে নিচে পড়ে যাবার পর তার স্পিনাল কর্ডে আঘাত পাবার দরুন প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে যান। তারপর তার চিকিৎসার খরচ দিতে দিতে তাদের পরিবারের জমানো সকল টাকা খরচ হয়ে যায়। এরকম অবস্থার কোন পরিবর্তন না দেখে ইয়াগালিনের মা তার তিন বছরের ছোট মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যান। ইয়াগালিনকে রেখে যান তার বাবার দেখাশুনা করার জন্য।
তার মায়ের চলে যাবার পর থেকে তিনি তার বাবার দেখাশুনা করছেন। সে প্রতিদিন সকাল ৬ টায় ঘুম থেকে উঠে তার বাবার জন্য রান্না করেন এবং বিদ্যালয়ে যাবার পূর্বে অবশ্যই তার বাবার সকালের নাস্তা করিয়ে যান।
তার বিদ্যালয় ছুটি হবার পর তিনি তার বাবার দুপুরের খাবার প্রস্তুত করেন। তারপর এই ছোট্ট শিশু টাকা যোগাড় করার জন্য বের হয়ে যান। কারণ, তার বাবার চিকিৎসার জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন।
এই ছোট শিশুর কাঁধে এতো কাজের চাপ থাকার কারণে তিনি খেলাধুলা বা অন্য কোন কিছু করতে পারেন না। আবার তার বাবার শরীরে তেল মালিশও করতে হয়। তার বাবা একবার আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে তা আর করতে পারে নি। এই ছোট্ট শিশু তার বাবা ছাড়া কিছু বোঝে না।
এখনকার যুগে এরকম দৃষ্টান্ত পাওয়া অনেক বিরল। একবার সেই শিশুর সাথে আমাদের নিজেদের তুলনা করা উচিৎ। যেখানে সে মাত্র ৭ বছর বয়সে তার বাবার পালন করছে, সেখানে আমাদের আশেপাশের কিছু নিকৃষ্ট মানুষ পর্যাপ্ত বয়স হবার পরেও মা-বাবার সাথে কাণ্ড-জ্ঞানহীন আচরণ করে।–সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে।