স্পোর্টস ডেস্ক, ১৮ সেপ্টেম্বর : অনুশীলনের নির্ধারিত সময় ছুঁইছুঁই, তবু যে তাদের ছায়া মেলে না। উপস্থিত সবার চোখ তাই আটকে থাকল বাফুফে ভবন ও অ্যাস্ট্রোটার্ফের মধ্যবর্তী রাস্তায়। নির্ধারিত সময় সকাল সাড়ে ৯টায়ই বাফুফের লোগো সংবলিত নীল গেঞ্জি পরে লোপেজের নেতৃত্বে একত্রে টার্ফে প্রবেশ করলেন কোচিং স্টাফরা। খোলা মাঠে আকাশের দিকে তাকিয়ে নিঃশ্বাস নিতে নিতে সবাই যেন চিনে নিতে চেষ্টা করছেন বাংলাদেশকে। আক্ষরিক অর্থেই যা হয়ে উঠল বাংলাদেশের ফুটবলে ইতালিয়ান পাঠশালার প্রথম দিন।
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের ইতিহাসে প্রথম ইতালিয়ান কোচ হিসেবে লোপেজের কাজ শুরু করতে যাওয়ার প্রথম দিনে অনুশীলনের নির্ধারিত সময়ের বেশ আগেই গতকাল সবুজ জার্সিতে সরগরম হয়ে উঠল বাফুফে ভবনের অ্যাস্ট্রোটার্ফ। দলে দলে ভাগ হয়ে সবার আগে মাঠে প্রবেশ করলেন অপেক্ষাকৃত জুনিয়ররা। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কোচিং স্টাফদের সঙ্গে মাঠে পা পড়ল অন্যসব খেলোয়াড়ের। বাংলাদেশের ফুটবলে ইতালিয়ান কোচিং স্টাফের যদি গতকাল প্রথম দিন হয়, তাহলে গতকাল ছিল ইতালিয়ান পাঠশালায় মামুনুলদেরও প্রথম দিন। প্রথম সকাল বলাই বুঝি ভালো।
গতকালের পাঠশালায় কোচিং স্টাফ ও খেলোয়াড় দু’পক্ষেরই প্রথম। তাই পরস্পর পরস্পরকে জানা ও জানানোর কৌশলই রপ্ত হলো বেশি। বল ওয়ার্ক ও ফিটনেস অনুশীলনের পাশাপাশি ম্যাচ চলল বেশ কিছুক্ষণ। আপাতত নতুন কোচিং স্টাফের উদ্দেশ্য একটাই, ম্যাচ খেলিয়ে খেলোয়াড়দের জানা। আবার খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যও নিজেকে জানানো। প্রথম দিনের অনুশীলনে যা হয় আর কী।
জর্ডানের বিপক্ষে খেলা একাদশকে এক পাশে দিয়ে অন্য পাশে ভিন্ন একাদশ সাজিয়ে ম্যাচ দিয়েই শুরু হয় লোপেজের খেলোয়াড়দের জানার প্রক্রিয়া। ১০ মিনিট অন্তর খেলা থামিয়ে দল পরিবর্তন চলল বেশ কয়েকবার। প্রথম দিনের অনুশীলনে ছিলেন না মিডফিল্ডার জামাল ভূঁইয়া, সাহেদ, মাসুক মিয়া জনি ও হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাস। ডেনমার্ক প্রবাসী জামাল বর্তমানে অবস্থান করেছেন ডেনমার্কে। এ ছাড়া সাহেদ আছেন ইনজুরিতে ও জনি অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্যাম্পে।
প্রথম দিনের অনুশীলন শেষে মামুনুলদের নিয়ে ফ্যাবিও লোপেজের মন্তব্যটা যথার্থই, ‘তারা ক্লান্ত। ফিটনেসে ঘাটতি আছে। কিন্তু ফিটনেসের জন্য প্রয়োজন আট সপ্তাহ। হাতে সময় কম। যত কম সময়ে ফিটনেসটা বাড়ানো যায়। দলের আকার ছোট করে আনার পর হবে মূল ট্রেনিং। তারপর ট্যাকটিক্যাল কাজ হবে এবং ম্যাচের এক সপ্তাহ আগে প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলতে হবে।’
বুধবার দুপুরে খাবার টেবিলেই খেলোয়াড়দের কানে পৌঁছে গেছে সাফ ফুটবলের সূচি। গতকালের অনুশীলনে খেলোয়াড়দের শরীরী ভাষায়ও ফুটে উঠল যা। সূচির বিষয়টি লোপেজেরও অজানা নয়, ‘কেবল জিতলেই আমি খুশি। গ্রুপটা জেনেছি, প্রত্যেক দলই কঠিন। প্রতিটি দলে এ প্রজন্মের ফুটবলাররা উন্নতি করছেন। গ্রুপের দলগুলো সম্পর্কে আমার ধারণা আছে, তাদের সম্মান করি, তবে আমি ভীত নই। কারণ আমাদের দলও খারাপ নয়।’ পরিচয় পর্ব ছাপিয়ে সবেই প্রথম দিনের অনুশীলন। নতুন কোচিং স্টাফকে নিয়ে তাই এখনও ভালো-মন্দ মন্তব্য করার সময় আসেনি, ‘আজ প্রথম দিনের মতো অনুশীলন করলাম। কোচ নিয়ে এখনি মন্তব্য করতে চাই না। তবে মনে হলো ভালোই হবে’ বলেন ডিফেন্ডার নাসিরুল ইসলাম নাসির।