রকমারি ডেস্ক: একটা উট পাখি, তবে তার নখ শিকলের মত। ল্যাকপেকে নয়, বরং অত্যন্ত শক্তিশালী শক্তপোক্ত এক জোড়া ঠ্যাং। “ঠোঁটের বদলে মুখে শক্ত পোক্ত দাঁতের সারি। হিংস্র হাসি। এ বার পালক ঢাকা গায়ে বেশ কয়েক পরত মাংস চড়ান। উচ্চতাটা দু’গুণ করুন। ভাবনায় আরও খানিক রঙ চড়ান। সত্যজিত্ রায়ের চঞ্চুর সঙ্গে বাদ বাকিটা মিশিয়ে দিন। কী পাবেন? যেটা পাবেন তাকে বলে ডাকোটারাপটর।
বেশি নয়, ওই ‘মাত্র’ ৬৬০ লক্ষ বছর আগে পৃথিবীতে অবাধে ঘুরে বেড়াতো এই না-পাখি, না-সরীসৃপ অদ্ভুত দর্শন শিকারি প্রাণী।
কিছুদিন আগেই সাউথ ডাকোটা থেকে উদ্ধার হয়েছে এই প্রাণীর জীবাশ্ম। গবেষকরা জানাচ্ছেন, আধুনিক পাখিদের এই পূর্বজরা আসলে টার্কিদের দূর সম্পর্কের তুতো ভাই। এখনও পর্যন্ত প্রাপ্ত জীবাশ্ম অনুযায়ী ডানাওলা ডাইনোসরদের মধ্যে বৃহত্তম এরাই।
ফসিল বলছে, নাক থেকে লেজ পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ১৭ ফুট। এক, একটা ডানা ফুট তিনেক লম্বা। শরীরটা ডানায় ঢাকা। বিশাল বপুর জেরে এত্ত বড় ডানা নিয়েও মোটেও উড়তে পারত না তারা। তবে তাদের পায়ের গঠন বলছে এদের উত্তরসূরীরা কিন্তু বেশ উড়তো। এদের পেটের কাছটা কেন বিশাল সে নিয়ে এখনও মত বিরোধ আছে বিজ্ঞানীদের। কারোর মতে বিশাল সাইজের ডিম রাখার জন্য তাদের পেটের সাইজ এত বড়। কারোর মতে পার্টনারকে আকৃষ্ট করতেই তাদের পেট মোটা।উড়তে না পারলেও ডাকোটারাপটররা কিন্তু দৌড়াতে পারত বিশাল জোরে। পাখিদের ‘ঠাকুরদার ঠাকুরদা’-এই মাংসাশি প্রাণী এই দৌড়ের জন্যই শিকারের সময় প্রতিযোগিতায় হেলায় হারাত অন্য ডাইনোদের। তাদের হিংস্র আক্রমণত্মক স্বভাব সে সময় বহু খুদে প্রাণীদের পৃথিবী থেকে সময়ের বহু আগেই একেবারে মুছে ফেলেছিল। গণবিলুপ্তি অবশ্য রেহাই দেয়নি ডাকোটারাপটরদেরও। এখনও অবশ্যি তারা টিকে থাকলে মানুষের পক্ষে সে সংবাদ বিশেষ সুখকর হত না তা বলাই বাহুল্য।