স্পোর্টস ডেস্ক, ২১ সেপ্টেম্বর : জগমোহন ডালমিয়া (১৯৪০–২০১৫)তৃতীয়বারের মতো ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের সভাপতি হয়েছিলেন তিনি। ছিলেন আইসিসির সভাপতিও। এ দেশের মানুষের কাছে অবশ্য তার চেয়েও বড় পরিচয়—বাংলাদেশ ক্রিকেটের অকৃত্রিম বন্ধু। সেই জগমোহন ডালমিয়া আর নেই। রবিবার কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে এই নশ্বর পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে অনন্তলোকে চলে গেছেন ডালমিয়া। তার বয়স হয়েছিল ৭৫।
গত বৃহস্পতিবার রাতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সেই রাতেই তার এনজিওগ্রাম করা হয়। গত দুদিন তার অবস্থা স্থিতিশীল বলেই জানানো হয়েছিল হাসপাতাল সূত্রে। কিন্তু কাল রাত দশটার দিকে বিসিসিআইয়ের টুইট বয়ে আনে দুঃসংবাদ—ডালমিয়া আর নেই।
ম্যাচ পাতানো কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত শ্রীনিবাসনের জায়গায় তৃতীয় দফায় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হয়েছিলেন গত মার্চে। তখনো ডালমিয়ার শারীরিক অবস্থা খুব ভালো ছিল না। নানা জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে আগের সেই প্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন। এ কারণে গত কিছুদিন ঠিকমতো দায়িত্বও পালন করতে পারছিলেন না।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে প্রথম ঢুকেছিলেন ১৯৭৯ সালে। ১৯৮৩ সালে ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের বছরে কোষাধ্যক্ষ হন। সেখান থেকে সচিব। ইন্দ্রজিৎ সিং বিন্দ্রার সঙ্গে ডালমিয়ার যুগলবন্দীর প্রথম ইংল্যান্ডের বাইরে বিশ্বকাপ আয়োজনে বড় ভূমিকা। ক্রিকেটের বাণিজ্যিকীকরণের পথিকৃৎ বলা যায় তাঁকে। ভারতীয় বোর্ডের সভাপতি পদে থাকা অবস্থায়ই ১৯৯৭ সালে আইসিসির সভাপতি নির্বাচিত হন। ক্রিকেটের বিশ্বায়নের মন্ত্রও ছড়িয়ে দেন সে সময়ই। ২০০০ সালে বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়াতেও যেটির বড় ভূমিকা।
বিশ্ব ক্রিকেটে ডালমিয়ার সমালোচকেরও অভাব ছিল না। বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্ব সব সময়ই একটু তির্যক চোখে দেখে এসেছে তাঁকে। কিন্তু প্রশাসক হিসেবে নিজেকে এমন এক উচ্চতায় তুলে নিয়েছিলেন যে, ডালমিয়ার মৃত্যুতে আক্ষরিক অর্থেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে ক্রিকেট বিশ্বে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড শোক প্রকাশ করেছে। শোক প্রকাশ করেছেন শচীন টেন্ডুলকারের মতো আরও অনেকেই। বিসিসিআইয়ের সচিব অনুরাগ ঠাকুরের টুইটটিই বলে দিয়েছেন আসল কথাটা, ‘ভারতীয় ক্রীড়াজগতের মহানতম প্রশাসক চলে গেলেন। একটি যুগের সমাপ্তি।’