১৭৯৮ সালের ২০ অক্টোবরে কায়রোর মুসলিম জনতা দখলদার ফরাশিদের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান করেছিল। নেপোলিয়ন মিশর দখল করার ফলে সেদেশে ফরাশি সেনাদের বিরুদ্ধে গণ অভ্যুত্থানের একটা ক্ষেত্র তৈরী হয়েছিল। এইদিনে কায়রোর জনগণ শহরের আধ্যাত্মিক ব্যক্তিবর্গকে সাথে নিয়ে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে সমবেত হয়। কায়রোর সামরিক গভর্নর জেনারেল দেবভা তখন তার সেনাদেরকে ঐ সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার নির্দেশ দেয়। তার এই নির্দেশের ফলে নিরস্ত্র জনতা এবং সশস্ত্র ফরাশি সেনাদের মাঝে একরকম যুদ্ধ বেধে যায়। মজার ব্যাপার হলো মিশরের এই নিরস্ত্র জনতার হাতে স্বয়ং গভর্নর দেবভা’সহ বহু ফরাশি সেনা নিহত হয়। ফরাশিরা যখন তাদের সামনে মহাবিপদ দেখলো , তখন কায়রোর কেল্লায় তারা কামান স্থাপন করে এবং কায়রো শহর বিশেষ করে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়কে লক্ষ্য করে গোলা ছুঁড়তে শুরু করে। এই গণহত্যার ঘটনায় আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসহ অন্তত ৩ হাজার মানুষ শহীদ হয়। ফরাশি সেনারা শহীদদের লাশ নীলনদীতে ফেলে দেয়। এভাবে নৃশংসতম উপায়ে কায়রোর গণঅভ্যুত্থান দমন করা হয়েছিল ।
১৮২৭ সালের ২০ অক্টোবরে ভূমধ্যসাগরের উত্তরাঞ্চলীয় নভারুন নামক উপসাগরে সমুদ্র যুদ্ধ সংঘটিত হয়। জায়গার নাম অনুসারে এই যুদ্ধ নভারন যুদ্ধ নামেই পরিচিতি পায়। এই যুদ্ধে বৃটেন,রাশিয়া এবং ফ্রান্সের যুদ্ধ জাহাজগুলো গ্রিসের সহযোগিতায় ভূমধ্যসাগরে অবস্থিত ওসমানী সাম্রাজ্যের যুদ্ধজাহাজগুলোর ওপর হামলা চালায়। হামলা চালিয়ে তারা ওসমানী সাম্রাজ্যের ৬০টি রণতরী ধ্বংস করে দেয় এবং ৬ হাজার অটোম্যান বা ওসমানী সেনাকে হত্যা করে। ওসমানীদের পতনের মধ্য দিয়ে এই যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে এবং অটোম্যান সাম্রাজ্যের নৌ-সেনারা গ্রিসের পশ্চিমাঞ্চলীয় সমুদ্রে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। ১৮২১ খ্রিষ্টাব্দে যখন গ্রিকরা ওসমানী সাম্রাজ্য থেকে নিজেদের স্বাধীনতার জন্যে অভ্যুত্থান শুরু করেছিল,ইউরোপীয় দেশগুলো তখন গ্রিসের সমর্থনে এগিয়ে এসেছিল। অবশেষে ১৮২৯ খ্রিষ্টাব্দে আদ্রিয়ানোপল চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে গ্রিস স্বাধীনতা লাভ করে।
৩১ বছর আগের এই দিনে ইরানের তেল শ্রমিকরা তৎকালীন স্বৈরাচারী শাহ সরকারের বিরুদ্ধে তাদের আন্দোলনের অংশ হিসেবে ধর্মঘট শুরু করে। এই ধর্মঘটের ফলে বিদেশে ইরানের তেল রপ্তানী বন্ধ হয়ে যায়। তার মানে শাহ সরকার তার আয়ের সর্বশ্রেষ্ঠ উৎস তেল খাতের আয় থেকে বঞ্চিত হয় এবং এই সরকারের ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি হয়। শুধু তাই নয়,ইরানের তেল রপ্তানী বন্ধ হয়ে যাবার কারণে বিশ্বব্যাপী তেলের মূল্য ব্যাপক বেড়ে যায়। শাহ সরকার ভয়-ভীতি ও হুমকি ধমকি দিয়ে তেল শ্রমিকদেরকে তাদের কর্মস্থলে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্যে ব্যাপক প্রচেষ্টা চালায়। কিন্তু ব্যাপক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও শাহের পতন পর্যন্ত ধর্মঘট অব্যাহত রাখে এবং ইরানের বিপ্লবী জনগণও তেল স্বল্পতার কারণে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখিন হওয়া সত্ত্বেও এই ধর্মঘটের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখে ।
৬১৩ বছর আগের এইদিনে বিশিষ্ট ভাষাবিজ্ঞানী ও বহু অভিধান প্রণেতা মাজদুদ্দিন আবু তাহের মোহাম্মাদ বিন ইয়াকুব ফিরোযাবাদী মৃত্যুবরণ করেন। তিনি হাদিস, তাফসির এবং ইতিহাস ক্ষেত্রেও ব্যাপক পাণ্ডিত্য অর্জন করেছিলেন। এসব বিষয়ে তিনি বহু গ্রন্থও রচনা করেন। তবে ভাষা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেই তাঁর অবদান ছিল সবচে বেশি। ভাষাবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে আরবি ভাষার অভিধান কামুস তাঁর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টিকর্ম। এর বাইরে সাফারুস সাআদাহ,তানভিরুল মিকইয়াস প্রভৃতি গ্রন্থ ইরানী এই ভাষাবিজ্ঞানীর অনন্য অবদান।