ইতিহাসের এ দিনে : ১২ অক্টোবর

0

১৫৩২ সালের এই দিনে ফ্রাসোয়া পিজারোর নেতৃত্বে স্প্যনিশ বাহিনী পেরুর উপর হামলা চালায়। ল্যাটিন আমেরিকার ইনকা জাতি তখন ঐ এলাকার শাসনভার পরিচালনা করতো। স্প্যানিশ বাহিনী আদীবাসীদের কোন ধরনের প্রতিরোধ ছাড়াই পেরু দখল করতে সক্ষম হয়। পেরু দখলের পর স্প্যানিশ নেতা পিজারো ‘ইনকা’ সাম্রাজ্যকে স্পেনের আধিপত্য মেনে নেয়ার আহ্বান জানায় আদীবাসীরা এ প্রস্তাব মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানালে পিজারো গণহত্যার নির্দেশ জারী করে। ফলে ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্যতম ও রক্তক্ষয়ী হত্যাকান্ড সংঘটিত হয় ল্যাটিন আমেরিকার পেরুতে। আর এভাবেই প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী ইনকা সাম্রাজ্যের পতন ঘটে।

ফার্সী ১৩৪৩ সালের এই দিনে ইরানের পার্লামেন্টে ক্যপিটুলেশন আইন পাশ করা হয়। এ আইনের মাধ্যমে ইরানে অবস্থানরত মার্কিন সেনারা যে কোন ধরণের অপরাধের বিচার থেকে মুক্ত থাকতো। তারা কোন অপরাধ কিংবা আইন ভঙ্গ করলে ইরানের আদালত তাদের বিচার করার কোন অধিকার রাখতো না। মার্কিন আদালতই তাদের বিচার করবে। এ আইনটি ছিল ইরানী জাতির চরম অবমাননার শামিল। তাই ইরানের ইসলামী বিপ্লবের স্থপতি মরহুম ইমাম খোমেনী(র:) তার এক ভাষণে এ আইনের স্বরুপ উন্মোচন করে তৎকালীন শাহ সরকার ও যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর সমালোচনা করেন। আর এরই ফলশ্রুতিতে ফার্সী ১৩৪৩ সালের ১৩ই আবান ইমাম খোমেনী(র:)কে বন্দী করে নির্বাসনে পাঠানো হয়।

১৯৬৮ সালের এই দিনে ইরানের মিনিয়েচার শিল্পের অন্যতম স্থপতি হোসেইন বেহজাদ পরলোক গমন করেন। ছেলেবেলা থেকেই চিত্রাঙ্কনের প্রতি তার অসম্ভব ঝোক ছিল। ফলে অল্প দিনের মধ্যেই তিনি ইরানের সফল চিত্র শিল্পি হিসাবে আত্ম প্রকাশ করেন। মিনিয়েচার শিল্পে তিনি নতুন নতুন ধারার প্রবর্তন করেন যা কিনা ইরানের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পকে নব রুপ দান করে। রং এর ব্যবহার ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে তিনি যে ধারা অনুসরণ করতেন তাতে দু:খ-বেদনা কিংবা হাসি-আনন্দ রং এর মাঝেই বিমূর্ত হয়ে উঠতো। আর এজন্যই হোসেইন বেহজাদকে ইরানের সমকালীন মিনিয়েচার শিল্পের জনক হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়।

১৯৬৮ সালের এই দিনে ঘানা স্পেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্পন করতে সক্ষম হয়। পনের শতকের দিকে পর্তুগীজ নাবিকরা প্রথমে এ দেশটি আবিস্কার করে। ১৭৭৮ সালে পতুগীজরা স্পেনের কাছে এ দ্বীপের দায়িত্বভার অর্জন করে। স্পেন বহু বছর পর্যন্ত এ দেশে তাদের আধিপত্য বজায় রাখে। অবশেষে ১৯৬৮ সালে এ দেশটি স্বাধীন প্রজাতন্ত্র হিসাবে আত্ম প্রকাশ করে।

১৯৯৯ সালের ১২ই অক্টোবর পাকিস্তানের সেনা বাহিনী প্রধান জেনারেল পারভেজ মোশাররফ এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে অপসারণ করে রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করেন । এ অভ্যুত্থানের মাত্র একদিন আগে নওয়াজ শরীফ জেনারেল পারভেজ মোশাররফকে তার ক্ষমতা থেকে বরখাস্ত করেছিলেন। জেনারেল পারভেজ মোশাররফ রাষ্ট্র প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণের পর সংবিধানের বেশ কিছু ধারায় সংশোধনী এনে সেদেশে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ও প্রভাব বৃদ্ধি করেন। কিন্তু ২০০৭ সালের নভেম্বর মাসে অভ্যন্তরীন ও বিদেশী চাপের কারণে প্রেসিডেন্ট মোশাররফ সেনা বাহিনী প্রধানের পদ ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। অবশেষে চলতি বছরের জুলাই মাসে রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যাপক তৎপরতা ও নির্বাচনে পিপলস পার্টির বিজয়ের ফলে পারভেজ মোশাররফ রাষ্ট্র ক্ষমতা থেকে পুরোপুরি সরে যান।

১০৩০ হিজরীর এই দিনে বিশিষ্ট আলেম, ফকীহ ও গণিতবিদ শেখ বাহাঈ ইরানের ইস্পাহান শহরে পরলোক গমন করেন। হিজরী ৯৫২ সালে তিনি লেবাননের ‘বাআলবাক’ শহরের এক ইরানী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতাও ছিলেন সে যুগের বিখ্যাত আলেম। শেখ বাহাঈ ছেলেবেলা থেকেই তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তা ও মেধার অধিকারী ছিলেন। ফলে খুব অল্প দিনের মধ্যেই জ্ঞানের বিভিন্ন শাখা যেমন ফিকাহ, তাফসীর, হাদিস, গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা, সাহিত্য ও ইতিহাসে ব্যাপক দক্ষতা অর্জন করেন। তিনি ধর্মীয় বিষয়ে বহু মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেছেন। ঐতিহাসিকরা তার রচিত গ্রন্থের সংখ্যা ১০০ এরও বেশী বলে উল্লেখ করেছেন। যদিও তিনি আজ আমাদের মাঝে নেই, তবে তার গবেষণা লব্ধ মূল্যবান গ্রন্থাবলী যুগ যুগ ধরে মানুষকে সুপথের সন্ধান দেবে এবং তাকে চিরঞ্জীব করে রাখবে। সূত্র : আইআরআইবি

Share.
মন্তব্য লিখুনঃ

 

',